Header Ads

ভাত দে হারামজাদা (Gaan O Kobita Ghor)

--রফিক আজাদ



  ভীষণ ক্ষুধার্ত আছি: উদরে, 

শরীরবৃত্ত ব্যেপে অনুভূত হতে থাকে—প্রতিপলে—সর্বগ্রাসী ক্ষুধা!

অনাবৃষ্টি—যেমন চৈত্রের শস্যক্ষেত্রে—

জ্বেলে দ্যায় প্রভূত দাহন—

তেমনি ক্ষুধার জ্বালা, জ্বলে দেহ।

দু’বেলা দু’মুঠো পেলে মোটে নেই অন্য কোনো দাবী, 

অনেকে অনেক কিছু চেয়ে নিচ্ছে, 

সকলেই চায়: বাড়ি, গাড়ি, টাকা কড়ি—

কারো বা খ্যাতির লোভ আছে; 

আমার সামান্য দাবী, পুড়ে যাচ্ছে পেটের প্রান্তর—

 ভাত চাই—এই চাওয়া সরাসরি—

ঠান্ডা বা গরম, সরু বা দারুণ মোটা 

রেশনের লাল চালে হ’লে কোনো ক্ষতি নেই—

মাটির শানকি ভর্তি ভাত চাই, 

দু’বেলা দু’মুঠো পেলে ছেড়ে দেবো অন্য-সব দাবী। 

 অযৌক্তিক লোভ নেই, এমনকি, 

নেই যৌনক্ষুধা— 

চাই নি তো: নাভিনিম্নে-পরা শাড়ি, 

শাড়ির মালিক; যে চায় সে নিয়ে যাক—

যাকে ইচ্ছা তাকে দিয়ে দাও— 

জেনে রাখো: আমার ওসবের কোনো প্রয়োজন নেই। 

যদি না মেটাতে পারো আমার সামান্য এই দাবী, 

তোমার সমস্ত রাজ্যে দক্ষযজ্ঞ কাণ্ড ঘ’টে যাবে; 

ক্ষুধার্তের কাছে নেই ইষ্টানিষ্ট, আইন কানুন— 

সম্মুখে যা কিছু পাবো খেয়ে যাবো অবলীলাক্রমে: 

থাকবে না কিছু বাকি—

চলে যাবে হা-ভাতের গ্রাসে। 

যদি বা দৈবাৎ সম্মুখে তোমাকে, ধরো, পেয়ে যাই— 

রাক্ষুসে ক্ষুধার কাছে উপাদেয় উপাচার হবে।

সর্বপরিবেশগ্রাসী হ’লে সামান্য ভাতের ক্ষুধা 

ভয়াবহ পরিণতি নিয়ে আসে নিমন্ত্রণ ক’রে। 

 দৃশ্য থেকে দ্রষ্টা অব্দি ধারাবাহিকতা 

খেয়ে ফেলে অবশেষে যথাক্রমে খাবো: 

গাছপালা, নদী-নালা, গ্রাম-গঞ্জ, ফুটপাত, 

নর্দমার জলের প্রপাত, 

চলাচলকারী পথচারী, নিতম্ব-প্রধান নারী— 

উড্ডীন পতাকাসহ খাদ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রীর গাড়ি— 

আমার ক্ষুধার কাছে কিছুই ফেলনা নয় আজ। 

ভাত দে হারামজাদা, তা না-হ’লে মানচিত্র খাবো।

No comments

লেখাটি আপনার কেমন লেগেছে অনুগ্রহ করে কমেন্ট করে জানাবেন।
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আপনিও আপনার জানা বা দেখা যে কোন ওইতিহাসিক-ভ্রমন স্থান সম্পর্কে অথবা আপনার লেখা কবিতা পাঠান আর আমাদের গান ও কবিতা ঘরের সদস্য হয়ে যান। ধন্যবাদ- all-banglakobita.com (ক্লিক করুন -আপনার লেখা)

Powered by Blogger.