Header Ads

গোবিন্দগঞ্জের নামকরণ, ইতিহাস, ঐতিহ্য জেনে নিন!!!



এক নজরে জেনে নিন গোবিন্দগঞ্জের নামকরণ, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধির সম্পর্কে!!!

বর্ধনকূঠি রাজবাড়ী



বর্তমান গোবিন্দগঞ্জ শহরের পূর্ব নাম ছিল গোলাপবাগ কথিত আছে গোলাপবাগ শহর গড়ার পূর্বে সেখানে বিশাল একটি গোলাপ বাগান ছিল সেখান থেকে নাম হয় গোলাপবাগ শহর; কিন্তু থানার নাম গোবিন্দগঞ্জ হওয়ায়
আজ গোলাপবাগ নাম বিলুপ্তের পথে বর্তমান গোবিন্দগন্জ শহর ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নামে সুপরিচিত।
গোবিন্দগঞ্জ নামটি কোথা থেকে আসল: হ্যাঁ গোবিন্দগঞ্জ নামকরণ নিয়ে ইতিহাসবীদদের বিভিন্ন মতপার্থক্য রয়েছে অনেকের ধারণা।


বর্তমান পুরাতন বন্দর নামে পরিচিত স্থানে গোবিন্দ নামে প্রভাবশালী এক হিন্দু জমিদার বাস করত তার নামানুসারে ১৭৯৩ সালে গোবিন্দগনজ থানা প্রতিষ্টা হয়। এমন ধারণা করেন অনেক ইতিহাস অনুসন্ধানকারীরা।

( জানা যায়, ইংরেজ গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেষ্টিংস তার শাসনামলে রংপুর জেলা কালেক্টরেটের আওতায় ১৭৯৩ সালে ২৪টি থানা প্রতিষ্ঠা করেন।


বর্তমান গাইবান্ধা এলাকায় সে সময় ৩টি থানা প্রতিষ্ঠিত হয়। ৩২৭ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানা এবং ১৮৮ বর্গমাইল এলাকা নিয়ে সাদুল্লাপুর থানা গঠিত হয়। দু’টি থানাই প্রতিষ্ঠিত হয় ইদ্রাকপুর অপর
থানাটি প্রতিষ্ঠিত হয় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে পাতিলাদহ পরগনায় ৯৩ বর্গমাইল এলাকা জুড়ে, ভবানীগঞ্জ মৌজায় ভবানীগঞ্জ থানা নামে। রংপুরের কালেক্টর ই-জি গেজিয়ার এর ১৮৭৩ সালের রিপোর্টে এই তথ্য উল্লেখিত হয়েছে।)


তবুও ইতিহাসের বিভিন্ন উৎস থেকে গোবিন্দগঞ্জ নামকরণের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য আসে
সাঁওতালী গ্রন্থ সত্যংশিবং সনাতন পুরাণে গোবিন্দগঞ্জের পাশ্ববর্তী প্রাচীণ পৌন্ড্রবর্ধন রাজ্যে ১০ জন রাজা স্বাধীন ভাবে রাজত্ব করছিল বলে উল্লেখ আছে। তাদের মধ্যে রাজা গোবিন্দ নামের একজন রাজা ছিল। জনশ্রুতি
আছে তার নামেই গোবিন্দগঞ্জ নামকরণ হয়েছে। যদিও এই জনশ্রুতি কে মেনে নেয়া কঠিন।
কারণ, জনশ্রুত রাজা গোবিন্দ ঐতিহাসিক কি না তা নিয়ে ইতিহাসবিদদের সন্দেহ আছে।


গোবিন্দ মন্দির, চক গোবিন্দ ও গোবিন্দপুর মৌজার নামের সাথে গন্জ যুক্ত হয়ে গোবিন্দগঞ্জের নামকরণ:-
বর্তমান পৌর শহরে পুরাতন গোবিন্দগঞ্জ নামে খ্যাত এলাকার মৌজার নাম গোবিন্দপুর ও চক গোবিন্দ। চক গোবিন্দ মৌজায় মুঘল আমলের পূর্বে নির্মিত বিখ্যাত গোবিন্দ মন্দির ছিল। সেই মন্দিরে প্রতিদিন বিগ্রহ
দর্শন ও পুজা দেয়ার জন্য শত শত লোক আসতো। কালক্রমেই এই মন্দিরকে কেন্দ্র করেই গোবিন্দগঞ্জ নামকরণ করা হয় বলে অনেকেই ধারণা করেন।


গোবিন্দগঞ্জ কৃষি শষ্যে প্রাচীনকাল থেকেই প্রসিদ্ধ ছিল। বর্তমানে মৃত করতোয়া প্রাচীনকালে প্রমত্ব করতোয়া ছিল। পুরাতন বন্দর এলাকায় এই করতোয়া নদীর তীরে মুঘল আমলে বিশাল বানিজ্য কেন্দ্র গড়ে উঠে। মুসলিমরা ভারত
বর্ষে আগমনের পর ভারতে আরবি ও ফার্সী শব্দের ব্যবহার শুরু হয়।
গঞ্জ একটি ফার্সী শব্দ। হাট, বাজার, গোলা, বন্দর, শষ্য ক্রয় কেন্দ্র প্রভৃতি নামে গঞ্জ শব্দটি ব্যবহার হয়। গোবিন্দগঞ্জ নামের সাথে গঞ্জ যুক্ত থাকায় মুঘল আমলের বানিজ্য কেন্দ্র স্থলের দুটি
মৌজার নাম চক গোবিন্দ ও গোবিন্দপুর এর গোবিন্দ এর সাথে গঞ্জ যুক্ত হয়েই গোবিন্দগঞ্জ নামকরণ হয় বলে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন।
গোবিন্দগঞ্জের অপর নাম গোলাপবাগ নাম নিয়েও মতপার্থক্য রয়েছে। ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের থানা মোড় চার মাথা থেকে দক্ষিণ পশ্চিম এলাকা গোলাপবাগ নামে পরিচিত। বৃটিশ শাসন কালে বর্ধনকোটের জমিদার শ্যামকিশোর বর্তমান বাজার এলাকায়
একটি বিশাল গোলাপ বাগান তৈরি করেন। সেই গোলাপ বাগান কালক্রমে গোলাপবাগ নাম ধারণ করেছে। গোবিন্দগঞ্জ নামকরণের নিয়ে বিভিন্ন মতভেদ থাকলেও গোবিন্দগঞ্জ ইতিহাস: অতীত ও বর্তমান গ্রন্থের লেখক গোপাল সরকারের মতে
গোবিন্দ মন্দির থেকেই গোবিন্দগঞ্জ নামকরণ হয়েছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
গোবিন্দগঞ্জের অনেক গুনীজন ও বয়জ্যেষ্ঠ্যরা গোপাল সরকারের মতের সমর্থনে মনে করেন, ইতিহাস অনুসন্ধানকারী লেখক, শিক্ষক ও পত্রিকা সম্পাদক মোস্তফা কামাল সুমনও এ মতবাদে বিশ্বাসী। প্রাচীন গোবিন্দ মন্দির থেকে চকগোবিন্দ ও গোবিন্দপুর নামের দুটি মৌজার নাম হয়। পরবর্তীতে মুসলিম শাসকগণ ভারত বর্ষে আগমনের পরে বিধৌত করতোয়া নদীর যেখানে বানিজ্য কেন্দ্র গড়ে তোলে সেই মৌজা চক গোবিন্দ ও গোবিন্দপুর নামের
গোবিন্দ এর সাথে গঞ্জ যুক্ত হয়েই গোবিন্দগঞ্জ নামের সৃষ্টি হয়।



১৭৯৩ সালে ৩২৭ বর্গ মাইল এলাকা নিয়ে গঠিত থানা ১৯৮১ সালে এসে ১৭৬ বর্গ মাইল এলাকা নিয়ে পলাশবাড়ী ও সাঘাটা পৃথক হয়ে যাওয়ায় বর্তমান রুপে অবস্থিত। 

১৯০৩ সালে সাঘাটা ও ১৯১৯ সালে পলাশবাড়ী থানা গঠনের আগ পর্যন্ত এই দুই থানা গোবিন্দগঞ্জ থানার এলাকার সাথেই যুক্ত ছিল।
গোবিন্দগঞ্জ গাইবান্ধা জেলার অন্তর্ভূক্ত একটি উপজেলা এ উপজেলার সীমানা পূর্বে-সাঘাটা উপজেলা,পশ্চিমে-জয়পুরহাট জেলা উত্তরে-পলাশবাড়ী উপজেলা , দক্ষিণে-বগুড়া জেলা
তার মধ্যে উপজেলা সদরের আয়তন ১৪.৭৩ বর্গ কি.মি. ২০০১ সালের আদমশুমারীর হিসাব অনুযায়ী এ উপজেলার লোকসংখ্যা ৪,৬১,৪২৮ ক) পুরুষ ২,৩৫,৬২২ খ) মহিলা ২,২৫,৮০৬ তবে বর্তমান লোকসংখ্যা প্রায় ৬ লাখ।এ উপজেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব ৯৫৮ জন ( প্রতি বর্গ
শিল্প প্রতিষ্ঠান ও হিমাগার:- এ উপজেলায় গ্যাস না থাকায় তেমন কোনো শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেনি তবে এ উপজেলায় উল্লেখ্যযোগ্য দুটি শিল্প রয়েছে সেটা হল বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে এই শিল্প কমপ্লেক্সটি অবস্থিত।

১৯৫৪ সালে এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে১৯৫৭ সালে সমাপ্ত হয় এবং ১৯৫৭-৫৮ সাল থেকে এটিতে চিনি উৎপাদন শুরু হয়।[৪] স্বাধীনতা লাভের পর, ১৯৭২সালে বাংলাদেশ সরকার এই প্রতিষ্ঠানটিকে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব এই বৃহদায়তন শিল্প-কমপ্লেক্সটি চিনি কারখানা, বাণিজ্যিক খামার ও জৈব সারকারখানা এবং অফিস ও আবাসন ভাবনের সমন্বয়ে গঠিত। এই মিলের দৈনিক আখ মাড়াই করার ক্ষমতা ১,৫০০ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক উৎপাদনের ক্ষমতা ১৫,০০০ মেট্রিক টন।


আরও আছে কোচাশহর ইউনিয়নের হোসিয়ারি শিল্প(শীতবস্ত্র শিল্প) এছাড়া আলু ও অন্যান্য বীজ সংরক্ষণের জন্য দুটি ব্যাক্তিমালিকানায় হিমাগার রয়েছে একটি হল ক) গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড ষ্টোরেজ হিমাদ্রি লিমিটেড। অপরটি খ)গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড ষ্টোরেজ।

এ উপজেলার জনগণের জানমালের নিরাপত্তার জন্য রয়েছে একটি পুলিশ স্টেশন,একটি হাইওয়ে থানা এবং একটি তদন্ত কেন্দ্র।জরুরী সহায়তা প্রদানের জন্য রয়েছে ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশন ও প্রস্তুত ফায়ার সার্ভিস টিম।
জেলা সদর হতে এ উপজেলা সদরের দূরত্ব ৩৮ কি.মি.
বিভাগ শহর রংপুর হতে এ উপজেলার দূরত্ব ৭২ কি.মি
এ উপজেলায় ১৯ মার্চ ১৯৮৯ সালে নির্মিত একটি উপজেলা প্রশাসনিক কার্যালয় রয়েছে।

এ উপজেলার ভূমিরুপ পলি ও বরেন্দ্র। নদনদীর মধ্যে করতোয়া ও বাঙ্গালী নদী।এছাড়া ছোট ছোট অনেক বিল রয়েছে।


1 comment:

  1. Sundor..............
    Itihas jene khub valo laglo.........
    Thanks to gaan O kobita ghor

    ReplyDelete

লেখাটি আপনার কেমন লেগেছে অনুগ্রহ করে কমেন্ট করে জানাবেন।
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আপনিও আপনার জানা বা দেখা যে কোন ওইতিহাসিক-ভ্রমন স্থান সম্পর্কে অথবা আপনার লেখা কবিতা পাঠান আর আমাদের গান ও কবিতা ঘরের সদস্য হয়ে যান। ধন্যবাদ- all-banglakobita.com (ক্লিক করুন -আপনার লেখা)

Powered by Blogger.