বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে মাইক্রোসফট ভাবছে কোন পথে যাওয়া উচিৎ!!! (গান ও কবিতা ঘর)
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের ১০ বিলিয়ন বা এক হাজার কোটি
মার্কিন ডলারে ক্লাউড কম্পিউটিং প্রকল্পের কাজ পাওয়ার পর মাইক্রোসফট অন্য দেশেও
একই রকম কাজ পাচ্ছে। বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটির ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের
ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ওই চুক্তিই ছিল সবচেয়ে বড় চুক্তি। বার্তা সংস্থা
আইএএনএসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বড় কাজ পাওয়ার পর এখন
অন্য দেশেও এ ধরনের কাজের জন্য চুক্তি মার্কিন
সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের জয়েন্ট
এন্টারপ্রাইজ ডিফেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার (জেডি) প্রকল্পে মাইক্রোসফট যে ক্লাউড
সেবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও বিভিন্ন গোয়েন্দা
সংস্থা ও সামরিক বাহিনীকে আকর্ষণ করছে।
এ
বিষয়ের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির নাম প্রকাশ না করে গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে বলা
হয়, এ বছরের
শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে অন্য দেশের জন্য ক্লাউড চুক্তির ঘোষণা দেবে
মাইক্রোসফট।
জেডি
নামের প্রকল্পটি নিয়ে মাইক্রোসফটের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল আরেক মার্কিন
কোম্পানি আমাজন। তাদের অভিযোগ, মাইক্রোসফট কাজটি স্বচ্ছ উপায়ে পায়নি। আমাজনের
প্রতিবাদের মুখে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাইক্রোসফট তখন অন্যান্য দেশে
এ ধরনের
প্রকল্প চালুর জন্য প্রচেষ্টা চালাতে থাকে। আমাজন
ধারণা করেছিল, জেডি প্রকল্পটি তারা পাওয়ার জন্য উপযুক্ত। তবে আগামী ১০ বছরের জন্য
পেন্টাগনের এক হাজার কোটি ডলারের ওই চুক্তি মাইক্রোসফট পেয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের
প্রতিরক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জেডি ক্লাউড চুক্তির আওতায় এন্টারপ্রাইজ
ও বাণিজ্যিক অবকাঠামোভিত্তিক সেবা পাওয়া যাবে, যা তাদের ব্যবসা ও মিশন পরিচালনায় কাজে
লাগবে। আমাজনের
অভিযোগ, আকর্ষণীয় ওই চুক্তি তাদের না পাওয়া পেছনে পক্ষপাত ও রাজনৈতিক
হস্তক্ষেপ মূল কারণ। তবে মাইক্রোসফট দাবি করেছে, তারা প্রকল্পটি পেয়েছে, কারণ প্রতিরক্ষা
দপ্তর তাদের ভালো দাম ও উন্নত ধারণা
করা হচ্ছে, মাইক্রোসফট তাদের ক্লাউড প্রযুক্তির ব্যবসা আরও বাড়াতে কাজ করবে। এর
বাইরে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা রেখে চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের
টিকটককে কেনার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
মাইক্রোসফটের
পক্ষ থেকে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির একজন
মুখপাত্র সিএনবিসিকে বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে তারা
দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। মার্কিন
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আমাজনের প্রধান
নির্বাহী জেফ বেজোসের সম্পর্ক খুব ভালো নয়। ট্রাম্প পছন্দ করেন না বেজোসকে। তাই
অনেকেই ধারণা করেন, সরকারি অনেক কাজ আমাজনের হাতছাড়া
হয়ে যাচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের ১০ বিলিয়ন ডলারের এমনই একটি
চুক্তি সে কারণেই আমাজনের হাতছাড়া হয়ে গেছে। আমাজন
কর্তৃপক্ষের দাবি, ক্লাউড কম্পিউটিং সেবায় তারা মাইক্রোসফটের চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে।
তাই এই চুক্তি হওয়ার কথা ছিল তাদের সঙ্গে। কিন্তু পক্ষপাত দেখিয়ে ওই কাজ মাইক্রোসফটকে
দেওয়া হয়েছে।গত
বছরের ২৫ অক্টোবর মাইক্রোসফটের সঙ্গে ১০ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে পেন্টাগন। ওই
চুক্তির পর এখন আরও কাজ পেতে শুরু করেছে মাইক্রোসফট।
যুক্তরাষ্ট্রের
প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন তাদের কম্পিউটারব্যবস্থা উন্নত করে ‘ক্লাউড’নির্ভর করার
সিদ্ধান্ত নেয়। এ জন্য প্রতিষ্ঠানটি ১০ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৮৫ হাজার কোটি
টাকা ব্যয় করছে। ‘জয়েন্ট এন্টারপ্রাইজ ডিফেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার (জেডি)’
নামের ১০ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের মাধ্যমে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরকে
প্রযুক্তিগত দিক থেকে আরও বেশি সক্ষম করে তোলা হচ্ছে। মার্কিন
প্রতিরক্ষা দপ্তর তাদের পুরোনো কম্পিউটার নেটওয়ার্ক–ব্যবস্থা পরিবর্তন করে
ক্লাউডভিত্তিক একক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরি করতে চায়। ধারণা করা হচ্ছে, জেডি প্রকল্পের
মাধ্যমে মার্কিন সামরিক বাহিনী যুদ্ধক্ষেত্র থেকে আরও সহজে বিভিন্ন চুক্তির
আওতায় মাইক্রোসফট পেন্টাগনকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ ও অতি গোপনীয়
সামরিক কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সেবাসহ আরও কিছু সেবা দেবে। শুরু
থেকে জেডি প্রকল্প পাওয়ার দৌড়ে সবার চেয়ে এগিয়ে ছিল আমাজন। জেডি প্রকল্পে
আমাজন যুক্ত হতে পারে—এমন সম্ভাবনার সঙ্গে সঙ্গে এই কোম্পানির বিরোধীরা সমালোচনায়
সোচ্চার হয়ে ওঠেন। তবে আমাজনের জেডিতে যুক্ত
হওয়ার বিষয়ে বড় সমালোচক ছিলেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ট্রাম্প
ওই চুক্তির স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। গত বছরের জুলাইয়ে সাংবাদিকদের জানান,
তিনি
আমাজন ও পেন্টাগনের চুক্তি-সম্পর্কিত অজস্র অভিযোগ পেয়েছেন। মার্কিন
প্রেসিডেন্ট বলেন, অন্যান্য কোম্পানি তাঁকে জানিয়েছে, ওই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যে চুক্তি হতে
চলেছে, তা
যথেষ্ট স্বচ্ছ নয়। এ জন্য কোন প্রক্রিয়ায় চুক্তিটি হতে চলেছে, সেটি যাচাই করার
জন্য অতীতেও
বেশ কয়েকবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রভাবশালী দৈনিক
ওয়াশিংটন পোস্টের মালিক জেফ বেজসের সমালোচনা করেছেন। এই
প্রকল্পে আগ্রহ দেখিয়েছিল গুগলও। তবে গত বছরের অক্টোবরে ক্লাউড কম্পিউটিং চুক্তির
দৌড় থেকে সরে দাঁড়ায় মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেটের অধীনে থাকা
গুগল। নৈতিক নীতিমালার সঙ্গে ওই প্রকল্প যায় না গুগলের
এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নীতিমালার
সঙ্গে জেডি চুক্তি যায় কি না, তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না এবং ওই চুক্তির কিছু
অংশ আমাদের আওতার বাইরে।’
বার্তা
সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গুগলের আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স
সফটওয়্যার ব্যবহারের মূল বাধা হচ্ছে এটি অস্ত্র বা যেকোনো ক্ষতিকর সার্ভিসে
ব্যবহার করা হলে তা মানবাধিকার ও নজরদারির আন্তর্জাতিক নীতির বিরুদ্ধে যাবে। গুগল
কর্তৃপক্ষ তাদের ক্লাউড ব্যবসাকে বাড়াতে ওই চুক্তি করতে আগ্রহী হয়েছিল। এতে
গুগলের বিপণনকাজে আরও এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু গুগলের হাজারো কর্মী তার
বিরোধিতা করেন। যাতে কেউ কোন ভাবে গুগলের প্রযুক্তি মানুষের ক্ষতি বা যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যাবহার না করতে পারে।
No comments
লেখাটি আপনার কেমন লেগেছে অনুগ্রহ করে কমেন্ট করে জানাবেন।
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আপনিও আপনার জানা বা দেখা যে কোন ওইতিহাসিক-ভ্রমন স্থান সম্পর্কে অথবা আপনার লেখা কবিতা পাঠান আর আমাদের গান ও কবিতা ঘরের সদস্য হয়ে যান। ধন্যবাদ- all-banglakobita.com (ক্লিক করুন -আপনার লেখা)