মহাভারতের ভগবান শ্রীকৃষ্ণের বাণী ও শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ
মহাভারতের শ্রীকৃষ্ণ, অর্জুন ও শকুনির বাণী সমূহঃ-
১. তখনই মানুষ ঈশ্বর এর দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে, যখন সংসারে দেখার মত কিছুই থাকে না ।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
২. যে মানুষ সব হারিয়েও শান্ত আর একাগ্র থাকে সেই জয়ী, আর যদি কোন ঘটনার মানুষ ভয়প্রাপ্ত হয় তবে তার পরাজয়ই হয়।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
৩. মানুষের স্বভাব, তার আচরণ আর তার কার্যই তার পরিচয়, বাস্তবে না পরিচয় মানুষের দেহের সাথে যুক্ত থাকে না তো সম্পর্কের ভিত্তি তার দেহের সাথে যুক্ত থাকে।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
৪. দান তাকেই বলে যাতে দানী হারায় আর যাচক প্রাপ্তি লাভ করে। অন্যদিকে বলিদান সেটাই হয় যা দানী দেয় আর সমস্ত জগৎ প্রাপ্ত করে।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
৫. যে ধর্মের নৌকা প্রস্তুত করে সে ঠিক পার হয়ে যায় তা সে সমুদ্রেই হোক বা সংসারে ।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
৬. মানুষকে সময়ের নির্দেশিত পথে চলতে হয়, কিন্তু সময় কখনও মানুষের নির্দেশিত পথে চলে না । -(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
৭. যে স্ত্রী লোকের সম্মান করে না, তার সামর্থই বৃথা, কারণ প্রত্যেক স্ত্রী-লোক মাতা দূর্গার আরেক রূপ হয়।
-(মহারথী অর্জুন)
৮. সকলকে নিজের ধর্ম স্বয়ং নিশ্চিত করতে হয়। ধর্মের উপদেশ দেয়া যায়, আদেশ কিছুতেই দেয়া যায় না।
-(বেদব্যাস)
৯. সে বস্তুর প্রতি মানুষের মূল্যবোধ থাকে না। যে বস্তু সহজেই লাভ করা যায় ।
-(মহামন্ত্রী বিদুর)
১০. যখন অপরিচিত কারো সংস্পর্শে আসা হয়, চরিত্রের পরিক্ষা তখনই হয় ।
-(মহামহিম ভীষ্ম)
১১. জয়ের জন্য বলের চেয়ে অধিক ছলের প্রয়োজন।
-(শকুনি)
১২. সুগন্ধ, দুরগন্ধ ও মানুষের স্বভাব কখনো গোপন থাকে না।
-(শকুনি)
১৩.
পরিস্থিতিকে যদি
নিজের
অনূকুলে না
আনতে
পার,
তবে
তাকে
শত্রুর
প্রতিকুল বানিয়ে
ফেলো।
-(শকুনি)
১৪.
তাদের
সাথে
বন্ধুত
করতে
হয়। যারা শত্রুর শত্রু
হয় ।
-(শকুনি)
১৫.
সেখানে
অবশ্যই ছল কাজ
করে, যেখানে বল
কাজ
করে
না
।
-(শকুনি)
১৬.
শক্তিমান সেই
যে
সহনশীল,
সহ্য
করতে
পারে।
যখন
হৃদয়
থেকে
ক্রোধ
আর
বিরোধিতা দূর
হয়ে
যায়,
তখন
সহনশক্তি ধর্মের
শক্তিতে পরিণত
হয়। বিরোধিতা শক্তির প্রমাণ হয়
না।
তোমার জীবনেও যদি এমন সময় আসে, যখন তোমার উপর কোন অন্যায় হয় তবে ন্যায় করার পূর্বে নিজের ক্রোধের উপর অঙ্কুশ অবশ্যই রেখো, কারণ ক্রোধ থেকে প্রতিশোধের জন্ম হয় আর ধর্ম থেকে ন্যায় জন্মায়।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
১৭.
চোখে
আবেগের
অবকুন্ঠন বেঁধে
যারা
আছে
তারা
স্বয়ং
নির্ণয়
কি
করে
করতে
পারে?
মনুষ্য
এই
ভ্রমে
থাকে
যে
সকল
নির্ণয়
সে
স্বয়ং
করছে।
কিন্তু
বাস্তবে সব
নির্ণয়
নিয়তিই
করে।
-(বেদব্যাস)
১৮.
যে বৃক্ষকে অধিক
খাদ্য
গ্রহন
করিয়ে
বা
শাখা
প্রশাখাকে কাট-ছাট করলে মধুর
ফল
পাওয়া
যায়
না। যে বৃক্ষ তিক্ত-ফল দান করে
সে
বৃক্ষকে উৎপাটন
করে
মধুর
ফল
প্রদানকারী বৃক্ষকে রোপন
করতে
হয়।
ভবিষ্যতের উদীয়মান সূর্যের প্রথম
কিরনকে
দেখো।
যা
সবার
জন্য
প্রতিক্ষা করছে।
ভবিষ্যৎকে শুদ্ধ
করার
জন্য
এই
অশুদ্ধ
বর্তমানকে ধ্বংস
করা
অনিবার্য।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
১৯.
অধিকতর
আত্মা
নিজের
দেহকেই
সব
কিছু
বলে
গণ্য
করে,
স্বয়ং
দেহ
থেকে
যে
ভিন্ন
তা
জানতেই
পারে
না
শরীরের
যে
দুঃখ,
সুখ,
স্বাদ।
গন্ধ
আদির
অনুভব
হয়
তাকেই
নিজের
অনুভব
মেনে
নেয়,
আর
পরিবর্তনের প্রয়াসই করে
না।
যে
আত্মা
পরিবর্তনের প্রচেষ্টাই করে
না,
নিরন্তর অধর্ম
করে
চলে
তাকে
জাগ্রত
করার
জন্য
দন্ড
দেয়া
অনিবার্য। তুমিও
এটা
জেনে
নাও
যে
তুমিও
কোন
শরীর
নও,
কেবল
মাত্র
এক
আত্মা।
এই পৃথিবীতে পরিলক্ষিত সকল
মানুষ
তা
নয়
যা
তুমি
ওদের
গণ্য
করছ,
কিছু
সময়ের
জন্য
এরা
শরীরে
বসবাস
করছে
মাত্র।
এদের
শরীরের
মৃত্যু
হবে
কিন্তু
এরা
সবাই
অমর।
সে
পুনরায়
নতুন
শরীর
ধারন
করবে।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
২০.
প্রেম
মুক্তি
দেয়,
মোহ
আবদ্ধ
করে।
প্রেম
ধর্ম,
আর
মোহ
অধর্ম।
প্রেম
উন্নতি
দেয়,
উচিৎ
অনুচিতের জ্ঞান
দেয়।
প্রেম
আর
মোহের
মাঝে
পার্থক্য থাকে।
বাস্তবে যা
প্রেম,
তা
কোন
মোহ
নয়।
প্রেমের জন্ম
করুণা
থেকে
হয়,
আর
মোহের
জন্ম
অহংকার
থেকে।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
২১.
নির্ণয়
নেয়ার
মুহুর্তে আমরা
সর্বদা
কোন
অন্য
ব্যক্তির উপদেশ,
সুচনা
বঞ্চনা
বা
পরামর্শকে আধার
করে
থাকি।
আর
আমাদের
ভবিষ্যতের আধার
হয়ে
থাকে
আমাদের
আজকের
নেয়া
সিদ্ধান্ত। তবে
কি
আমাদের
সম্পূর্ণ জীবন
কোন
অন্য
ব্যাক্তির বুদ্ধির পরিনাম?
তাহলে কি
আমাদের
ভবিষ্যৎ অন্য
ব্যক্তির পরামর্শ, কোন
অন্য
ব্যক্তির দেয়া
উপদেশের ফল?
আমরা
কি
কখনও
বিচার
করেছি?
সবাই
জানে
যে
ভিন্ন
ভিন্ন
লোক
একই
পরিস্থিতিতে ভিন্ন
ভিন্ন
পরামর্শ দিয়ে
থাকে।
মন্দিরে দাড়ানো
ভক্ত
বলে
দান
করা
উচিৎ।
ধার্মিক হৃদয়
ধার্মিক উপদেশ
দিয়ে
থাকে
আর
অধর্ম-ভরা হৃদয় অর্ধামিক পরামর্শ দেয়। আর চোর বলে
যদি
সুযোগ
পাওয়া
যায়
তবে
ঐ
মূর্তির গয়না
চুরি
করা
উচিৎ।
এই
ধর্মময়
উপদেশ
পরামর্শ স্বীকার করলে
মানুষ
সুখের
দিকে
যায়।
কিন্তু
এইরকম
পরামর্শ স্বীকার করার
আগে
স্বয়ং
নিজের
হৃদয়ে
ধর্মকে
স্থাপন
করা
কি
অনেক
বেশি
জরুরী
নয়?
স্বয়ং
বিচার
করুন।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
২২.
মানুষের সব
সম্পর্কের আধার
হল
প্রত্যাশা। পতি
কেমন
হবে-
যে
আমার
জীবন
সুখ
আর
সুবিধায় ভরে
দিবে।
পত্নী
কেমন
হবে-
যে
সর্বদা
আমার
প্রতি
সমর্পিত থাকবে।
সন্তান
কেমন
হবে-
যে
আমার
সেবা
করবে,
আমার
আদেশ
মেনে
চলবে।
মানুষ
প্রেম
তাকেই
দিতে
পারে,
যে
তার
প্রত্যাশা পূরণ
করতে
পারে।
আর
প্রত্যাশার নিয়তিই
হচ্ছে
ভঙ্গ
হওয়া।
কিভাবে?
কারন-
প্রবল
ইচ্ছা
থাকলেও
কোন
মানুষ
কারোর
সকল
প্রত্যাশা পূর্ণ
করতে
পারে
না।
আর
তার
থেকেই
জন্ম
নেয়
সংঘর্ষ। সকল
সম্পর্ক সংঘর্ষে পরিবর্তিত হয়ে
যায়।
কিন্তু
মানুষ
যদি
প্রত্যাশাকে সম্পর্কের আধার
না
বানায়,
আর
স্বীকার করে
যে,
কেবল
সম্পর্কই মূল
আধার।
তবে
কি
জীবন
আপনা
থেকেই
সুখ
আর
শান্তিতে ভরে
যাবে
না।
স্বয়ং
বিচার
করে
দেখুন।
-(ভগবান শ্রীকৃষ্ণ)
No comments
লেখাটি আপনার কেমন লেগেছে অনুগ্রহ করে কমেন্ট করে জানাবেন।
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম। আপনিও আপনার জানা বা দেখা যে কোন ওইতিহাসিক-ভ্রমন স্থান সম্পর্কে অথবা আপনার লেখা কবিতা পাঠান আর আমাদের গান ও কবিতা ঘরের সদস্য হয়ে যান। ধন্যবাদ- all-banglakobita.com (ক্লিক করুন -আপনার লেখা)